ঘুমের অভাব আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে বিঘ্নিত করে। কাজের চাপ, দুশ্চিন্তা বা অন্যান্য কারণে ঘুমের সমস্যা হতে পারে। তবে চিন্তা করবেন না, বিজ্ঞানসম্মত কিছু কৌশলের মাধ্যমে আপনি স্বাভাবিক ঘুম ফিরে পেতে পারেন।
১. নাকের বাম ছিদ্র দিয়ে নিঃশ্বাস নিন: যোগব্যায়ামের এই কৌশলটি রক্তচাপ কমাতে এবং শরীরকে শান্ত করতে সাহায্য করে। বাম কাত হয়ে শুয়ে একটি আঙুল দিয়ে নাকের ডান ছিদ্রটি চেপে ধরুন। এরপর বাম ছিদ্র দিয়ে আস্তে আস্তে, গভীরভাবে শ্বাস নিন।
২. পেশির শিথিলতা: শরীরের বিভিন্ন পেশিকে শিথিল করে ঘুম আনতে সাহায্য করা যায়। বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে পাড়ুন। গভীর শ্বাস নিন এবং ধীরে ধীরে নাক দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। একই সঙ্গে আপনার হাঁটু ভাঁজ করে পায়ের দিকে চাপ দিন এবং ছাড়ুন। একই ভাবে শরীরের অন্যান্য পেশিগুলো যেমন কাঁধ, পেট, বুক, ঊরু, বাহু ইত্যাদিতে চাপ প্রয়োগ করুন এবং শিথিল করুন।
৩. জোর করে জাগুন: এটি বিপরীত মনোবিজ্ঞানের একটি কৌশল। নিজেকেই চ্যালেঞ্জ করুন যে জেগে থাকবেন। এতে আপনার মন বিদ্রোহী হয়ে উঠবে এবং আপনি তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়বেন।
৪. সারাদিনের পুনরাবৃত্তি: সারাদিনের প্রতিটি খুঁটিনাটি মনে করার চেষ্টা করুন। কথাবার্তা, দৃশ্যাবলি, শব্দ ইত্যাদি মনে করতে করতে আপনার ঘুমানোর মতো মানসিক অবস্থা তৈরি হয়ে যাবে।
৫. চোখ ঘোরানো: চোখ বন্ধ করুন এবং আপনার চোখের মণি ঘোরাতে থাকুন। এতে আপনার ঘুমের হরমোন বেড়ে যাবে।
৬. কল্পনা করুন: দৃশ্য কল্পনা করার মেডিটেশন ঘুম আনতে বেশ কার্যকর। নিজেকে কোনো সুন্দর পরিস্থিতির দৃশ্যে কল্পনা করুন।
৭. নিঃশ্বাসের ব্যায়াম: একটি আরামদায়ক অবস্থানে বসুন। চোখ বন্ধ করুন, কাঁধ নামিয়ে দিন, চোয়াল আরামে রাখুন, তবে মুখটা হালকাভাবে বন্ধ রাখুন। নাক দিয়ে গভীরভাবে শ্বাস নিন, তবে বুক ভরে নয়, পেট ভরে! এবার মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। এভাবে অন্তত ছয়বার করুন। এরপর এক মুহূর্ত স্থির হয়ে বসে থাকুন। নিজেকে বলুন, আমি ঘুমের জন্য তৈরি।
৮. সঠিক জায়গায় চাপ প্রয়োগ: শরীরে এমন কিছু বিশেষ জায়গা রয়েছে যেখানে মৃদু কিন্তু দৃঢ়ভাবে চাপ প্রয়োগ করলে ঘুম আসে। দুই ভ্রূ’র ঠিক মাঝখানে, নাকের একদম উপরের অংশে বুড়ো আঙুল রাখুন। ২০ সেকেন্ড চেপে ধরে রাখুন তারপর আঙুল সরিয়ে নিন। এভাবে আরো দুবার করুন।
মনে রাখবেন:
- নিয়মিত ঘুমের সময়সূচী: প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান এবং একই সময়ে ঘুম থেকে উঠুন।
- ঘুমাতে যাওয়ার আগে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার এড়িয়ে চলুন: মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট ইত্যাদির নীল আলো ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
- ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভারী খাবার বা পানীয় এড়িয়ে চলুন: এগুলো হজমে সমস্যা তৈরি করে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন: তবে ঘুমাতে যাওয়ার ঠিক আগে ব্যায়াম করা এড়িয়ে চলুন।
- শোবার ঘর অন্ধকার, শান্ত এবং ঠান্ডা রাখুন: এটি ঘুমাতে সহায়তা করবে।
এই কৌশলগুলো অনুসরণ করে আপনি ঘুমের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবেন এবং সুস্থ একটি জীবন যাপন করতে পারবেন।
আপনার স্বাস্থ্যের যত্ন নিন!
আপনি চাইলে এই আর্টিকেলটি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করে অন্যদেরও উপকৃত করতে পারেন.